রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন
হাহাকার বেসরকারি কর্মজীবীদের

হাহাকার বেসরকারি কর্মজীবীদের

ঢাকার একটি ব্রোকারেজ হাউজে চাকরি করতেন মোহসীন আলী। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শেয়ার ব্যবসা মন্দার কারণে প্রতিষ্ঠানটি বেতন প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। ৩০ হাজার টাকার বেতন এখন নেমে এসেছে ১০ হাজারে। তাও নিয়মিত দিতে পারছে না চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানটি। ফলে হাহাকার নেমে এসেছে তার জীবনে। টিকে থাকার লড়াইয়ে বাসা ছেড়ে দিয়ে স্ত্রী সন্তানকে ভোলার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়েছেন তিনি। বেকারত্বের ভয়ে একটি মেসে থেকে এক-তৃতীয়াংশ বেতনেই নিয়মিত অফিস করছেন তিনি।

এমন পরিস্থিতি শুধু মোহসীন আলীর নয়। ঢাকায় বসবাসরত প্রায় প্রতিটি বেসরকারি চাকরিজীবী পরিবারে এমন হাহাকার দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক বেতন কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দোকানে বিক্রি না হওয়ায় ব্যবসা গুটিয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বেসরকারি চাকরিজীবীরা বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়ায় ঢাকার আবাসিক এলাকাগুলোর প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বাসা ভাড়া দেয়ার বিজ্ঞাপন ঝুলছে। বাসাভাড়া কমিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটছে।

রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন ডা: শরীফুল ইসলাম। করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালটি বেতন বন্ধ করে দেয়। এরপর জমানো অর্থ দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ইস্কাটনের ভাড়া বাসায় অবস্থান করেন। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় গতমাসে বাড়িওয়ালাকে ভাড়া কমিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন তিনি। অবস্থা বুঝে বাড়িওয়ালা তার ২২ হাজার টাকা ভাড়া থেকে সাত হাজার টাকা কমিয়ে দিতে রাজি হন। যেটা করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত চলবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় ২২ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে তাকে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের পরিস্থিতি আরও নাজুক। করোনা পরিস্থিতিতে দু-একটি ছাড়া প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতনভাতা বন্ধ প্রায়। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাদের।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সজীব হোসেন। লকডাউন শুরু হলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর বন্ধ হয়ে যায় তার বেতন-ভাতা। ঢাকার বাসা ছেড়ে দিয়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে উত্তরাঞ্চলের একটি জেলার নিজ গ্রামে গিয়ে ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন এই শিক্ষক।
করোনা পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরাও। কয়েকটি পত্রিকা ছাপানো বন্ধ করে অনলাইন কার্যক্রম চালাচ্ছে। বেতন বকেয়া পড়েছে অনেক গণমাধ্যমে। বেতন বন্ধ হয়ে গেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের, চলছে ছাঁটাইও। গত ঈদুল ফিতরের সময় বহু সংবাদকর্মী বোনাস পাননি। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার আয়ের প্রধান উৎস বিজ্ঞাপন। কিন্তু বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়ায় অধিকাংশ গণমাধ্যম ঠিকমতো বেতন দিতে পারছে না। ফলে পরিবারে হাহাকার নেমে এসেছে তাদেরও।

তবে করোনার এই সময়ে দুশ্চিন্তামুক্ত রয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। করোনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে রোস্টার করে ডিউটি পালন করতে হচ্ছে তাদের। এ ছাড়াও একটি বড় অংশের কর্মকর্তা-কর্মচারী মাসে ৪-৫ দিন অফিস করছেন। এর পরেও বেতন বা ভাতায় কোনো প্রভাব পড়ছে না তাদের। এরপরে করোনা আক্রান্ত বা মৃত্যু বরণ করলে রয়েছে ৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার প্রণোদনা।

মার্চ মাসের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ গত ৩০ মে শেষ হয় টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি। দীর্ঘ ছুটি, লকডাউন, সংক্রমণ পরিস্থিতির ক্রমাবনতির কারণে বেসরকারি বিভিন্ন খাতের চাকুরে ও শ্রমজীবী মানুষের দুর্দিন চলছে।

সামষ্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনায় করোনার প্রভাবের সার্বিক চিত্র নিয়ে গত ৭ জুন সংবাদ সম্মেলন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তারা বলেছে, করোনার কারণে আয় কমে যাওয়ায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে সার্বিকভাবে দারিদ্র্যের হার ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি আয় ও ভোগের বৈষম্যও বেড়েছে।

সিপিডির মতে, করোনার কারণে ভোগের বৈষম্য বেড়ে দশমিক ৩৫ পয়েন্ট হয়েছে। ২০১৬ সালে এটি ছিল দশমিক ৩২ পয়েন্ট। একইভাবে আয়ের বৈষম্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশমিক ৫২ পয়েন্ট। ২০১৬ সালের হিসাবে এটি ছিল দশমিক ৪৮ পয়েন্ট। করোনার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল কিংবা সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারেনি। এতে একদিকে চাকরি হারিয়েছেন অনেকে, অনেকে কম বেতন পেয়েছেন।

পরের দিন গত ৮ জুন এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত জানান, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সরকারঘোষিত ৬৬ দিনের লকডাউনে প্রায় পৌনে চার কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে। এ সময়ে পাঁচ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের শ্রেণিকাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে দুই কোটি ৫৫ লাখ মানুষ হতদরিদ্র হয়েছে। তবে অতি ধনীর অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com